পরিকাঠামো খাতে রাজ্যে 'দরাজ' কেন্দ্র, 'চিকেন নেক' করিডরে বরাদ্দ ৯৯৫ কোটি

  • By UJNews24 Web Desk | Last Updated 25-05-2022, 01:27:58:pm

মাঝের সাত বছরে অনেকখানি বদলে গিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নকশা। অনেক বেশি শীতল হয়েছে প্রতিবেশী চিনের সঙ্গে সম্পর্ক। অতিমারির ধাক্কা পুরোদস্তুর কাটিয়ে উঠতে এখনও ঢের দেরি অর্থনীতিরও। এই পরিস্থিতিতে সাত বছরের দীর্ঘ টানাপড়েন শেষে রাজ্যের ‘চিকেন নেক’ করিডর বলে পরিচিত অংশটির পরিকাঠামো মজবুত করতে প্রায় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। শুধু তা-ই নয়, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্যও কেন্দ্রীয় বরাদ্দ এক লাফে প্রায় ছ’গুণ হওয়ার ‘সিদ্ধান্তের’ কারণে পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর কদমে কোমর বাঁধছে নবান্ন।

আর্থিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, আদালতের ডিএ-নির্দেশ থেকে শুরু করে লক্ষ্মীর ভান্ডার-সহ নানা কল্যাণ প্রকল্প— বিভিন্ন ক্ষেত্রে পাহাড়প্রমাণ খরচের প্রয়োজনীয়তার দরুন পরিকাঠামো খাতে মোটা টাকা জোগানো কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে রাজ্যের পক্ষে। অথচ তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে শিল্পকে পাখির চোখ করতে মমতা-সরকারের জন্য তা একান্ত জরুরি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের এই টাকা পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্যকে স্বস্তি দেবে বলেই অভিমত তাঁদের। যদিও প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, মূলত ‘চিনের চাপেই’ এই পদক্ষেপ করতে হল কেন্দ্রকে।

শিলিগুড়ির ‘চিকেন নেক’ করিডর উন্নয়ন প্রকল্প দ্রুত কার্যকর করতে কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গডকড়ীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই খাতে প্রায় ৯৯৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক। তা দিয়ে কাজ করবে রাজ্যের পূর্ত দফতর। উত্তরবঙ্গের ওই রাস্তাটি ইসলামপুর থেকে শিলিগুড়ি হয়ে কোচবিহার পর্যন্ত গিয়েছে।

মন্ত্রক সূত্রের খবর, ২০১৪-১৫ সাল থেকে শিলিগুড়ির ‘চিকেন নেক’ করিডরের পরিকাঠামো সংস্কারের পরিকল্পনা চলছিল। পশ্চিমবঙ্গের এই অংশ নেপাল, ভুটান এবং পুরো উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগসূত্র। চিন, বাংলাদেশের সীমান্তও এই অংশের খুব কাছে। ফলে কৌশলগত অবস্থানের দিক থেকে এই অংশের গুরুত্ব অপরিসীম। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ওই অংশের ১১.৭ কিলোমিটার চার থেকে ছয় লেনে সম্প্রসারিত হবে। এই দূরত্বের মধ্যে চার কিলোমিটারে থাকবে উড়ালপথ (এলিভেটেড করিডর)। সমান্তরালে বালাসন ও মহানন্দা বড় সেতু আর চামটা ও পাঁচনইয়ে ছোট সেতু পুরো পরিকাঠামোকে এক সুতোয় বাঁধবে।

এর পাশাপাশি, জাতীয় সুরক্ষার প্রশ্নে আর একটি কৌশলগত অবস্থানে থাকা পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সেবক-রংপো (সিকিমগামী রাস্তা) পর্যন্ত প্রায় ৫২ কিলোমিটার পথে ধস সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ১,২০০ কোটি টাকার পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে। এ রাজ্য থেকে সিকিমগামী জাতীয় সড়ক-১০ সংস্কারের জন্য প্রাথমিক ভাবে ১০০ কোটি টাকাও মঞ্জুর হয়েছে। বাকি টাকা আসার কথা এই আর্থিক বছরে।

এক কর্তার কথায়, ‘‘চিকেন নেক করিডরের আওতায় থাকা শিলিগুড়ি শহরের ভিতর দিয়ে যাওয়া রাস্তাটি এখন সাত মিটার চওড়া। বালাসন নদীর আগে পর্যন্ত এশিয়ান হাইওয়ে-২ রাস্তাটি চওড়া করার কাজ ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে শেষ হয়েছে। এ বার শিলিগুড়ি করিডরের এই ১১.৭ কিলোমিটার রাস্তাটি চওড়া করার কাজটি শুরু হবে।’’

ওই কর্তার সংযোজন, ‘‘কেন্দ্র চাইছে, এমন সড়ক পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখতে, যা দিয়ে প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর গাড়ি, এমনকি সাঁজোয়া গাড়িও অনায়াসে চলাচল করতে পারে। এই প্রকল্পের টেন্ডার করবে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক এবং কাজ করবে পশ্চিমবঙ্গ পূর্ত দফতর।’’

 

Share this News

RELATED NEWS