স্বপ্ন ছিল, সুযোগ ছিল না দেখার, সুযোগ যখন এল প্রিয় গায়ক তখন ব্যবচ্ছেদের ঘরে
- By UJNews24 Web Desk | Last Updated 03-06-2022, 12:11:20:pm
অন্য অনেকের মতো ওঁদেরও স্বপ্ন ছিল, সামনে থেকে এক বার তাঁকে দেখার। কিন্তু সুযোগ ছিল না। বুধবার সকালে সেই ‘সুযোগ’ যখন এল, তখন ময়না-তদন্তের টেবিলে শুয়ে রয়েছেন ‘তড়প তড়প কে ইস দিল সে…’র গায়ক কেকে। যাঁকে স্পর্শ করার বিস্ময়ের পরে নিথর দেহ ব্যবচ্ছেদের জন্য ছুরি-কাঁচি এগিয়ে দিতে গিয়ে হাত কেঁপে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরেও যেন সেই ঘোর কাটছিল না এসএসকেএমের মর্গের তিন কর্মীর।
ওই দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় তিন ঘণ্টা ময়না-তদন্তের গোটা প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন আনন্দ মল্লিক, ভিকি মল্লিক ও সঞ্জয় মল্লিক। মর্গের পিছনের কোয়ার্টার্সের বাসিন্দা ওই তিন কর্মীর কাছেই সে দিন সকাল সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক ইন্দ্রাণী দাসের ফোন গিয়েছিল। জানানো হয়েছিল, সকাল ১০টার মধ্যে আসতেই হবে। অবাক হয়ে বছর বত্রিশের আনন্দ পুনরায় ফোন করে জানতে চান, ‘‘ম্যাডাম, বিশেষ কিছু ঘটেছে?’ উত্তরে শোনেন, ‘‘ভিআইপি-র দেহের ময়না-তদন্ত হবে। সিএমআরআই হাসপাতাল থেকে আসবে।’’ তখনও ওঁরা বুঝতে পারছিলেন না, কেন জরুরি তলব।
নিয়মানুযায়ী কার দেহের ময়না-তদন্ত হবে, তা আগাম জানানো হয় না ওই ময়না-তদন্ত সহকারী বা ডোমেদের। কাজে যোগ দেওয়ার পরে তাঁরা জানতে পারেন। এ দিন ভিকি বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে বেরোনোর তাড়া ছিল। তখনই টিভি-র খবরে এক ঝলক দেখলাম, কেকে-র দেহ ময়না-তদন্তের জন্য এসএসকেএমে আনা হবে। ভাবতে পারছিলাম না, এটা কি সত্যি!’’ প্রায় সাত বছর ধরে পিজি-র মর্গে চাকরি করছেন বাণিজ্য বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা ভিকি এবং অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ আনন্দ। বছর পঁয়তাল্লিশের সঞ্জয় অবশ্য প্রায় ১০ বছর ধরে মর্গে কর্মরত। এত বছরের কর্মজীবনে অসংখ্য দেহের ময়না-তদন্তে সহযোগীর কাজ করেছেন। সঞ্জয় বলেন, ‘‘ওই টেবিলে সকলেই আমাদের কাছে সমান। কিন্তু তা-ও যেন মনের ভিতরে একটা কষ্ট হচ্ছিল।’’