খরচ করলেন না একটাও শব্দ! সাড়ে ৯ ঘণ্টা ইডির জেরায় ‘ক্লান্ত’ মুখ্যমন্ত্রীকে নিতে এলেন স্ত্রী

  • By UJNews24 Web Desk | Last Updated 18-11-2022, 03:54:21:pm

একের পর এক প্রশ্নবাণ ইডির (Enforcement Directorate), সাড়ে নয় ঘণ্টা ধরে জেরা করা হল ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে (Hemant Soren)। বেআইনি খনি খাদান ও বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার র‌্যাডারে রয়েছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার তাঁকে ইডির দফতরে তলব করা হয়েছিল জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য। দুপুর ১২টা নাগাদ তিনি ইডির রাঁচীর দফতরে পৌঁছন। রাত ৯টা নাগাদ তাঁকে ইডি দফতর থেকে বের হতে দেখা যায়। হেমন্ত সোরেনের স্ত্রী কল্পনা সোরেন তাঁকে নিতে এসেছিলেন। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি না হয়েই, তাঁরা সোজা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।

বৃহস্পতিবার ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার আগে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। সেখানে তিনি বলেন, “তিনি রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার”। যথাযথ তদন্তের পরই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা উচিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ইডির এই জিজ্ঞাসাবাদকে বিজেপির ‘অপারেশন লোটাস’ বলেই উল্লেখ করে সোরেন বললেন, “সরকার ফেলার প্রচেষ্টায় বারবার ব্যর্থ হয়ে অন্য এক অপারেশন লোটাসের পরিকল্পনা করছে বিজেপি। তারা রাজ্যে অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে”।

উল্লেখ্য, অবৈধ খনি বণ্টন ও সেই সংক্রান্ত বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায় এখনও পর্যন্ত ইডি মুখ্য়মন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সহযোগী পঙ্কজ মিশ্র সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। ইডির চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, খনি কেলেঙ্কারিতে প্রায় এক হাজার একশো কোটি টাকারও বেশি রাজস্বের ক্ষতি হয়েছে সরকারের। এর আগে নভেম্বরের ৩ ও ১২ তারিখ ইডি-র দফতরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সোরেনকে, কিন্তু সেই হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা।

ইডির দাবি, বেআইনিভাবে খনি বন্টন ও আর্থিক তছরুপ মামলায় ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন অন্তত ১৫ থেকে ১৮ জন। মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনেরও এই দুর্নীতিতে ভূমিকা রয়েছে। তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, চলতি বছরের জুলাই মাসে পঙ্কজ মিশ্রের বাড়ি থেকে  মুখ্যমন্ত্রীর স্বাক্ষরিত এবং স্বাক্ষরবিহীন দুটি চেক উদ্ধার করা হয়। সেই চেকের নম্বর মিলিয়ে দেখা গিয়েছে, হেমন্ত সোরেনের ঘনিষ্ঠ এক মহিলাকে টাকা দিয়েছিলেন পঙ্কজ।

তবে প্রথম থেকেই দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করছেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। ইডি-র মুখোমুখি হওয়ার আগে তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি প্রশাসনের ভিতরে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে। সরকারকে নড়বড়ে করার ষড়যন্ত্র বলা যেতে পারে। তিনি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সরকার বিরোধীরা সরকার ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নাম না করেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একজন মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও যেভাবে আমাকে ইডি তলব করছে মনে হচ্ছে, আমি পড়শি কোন দেশ থেকে পালিয়ে এ দেশে আশ্রয় নিয়ে রয়েছি। আমার রাজনৈতিক কেরিয়ারে কোনও নেতাকে দেশ ছেড়ে পালাতে দেখিনি, কিন্তু ব্যবসায়ীদের দেখেছি।”

 

Share this News

RELATED NEWS