আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক তৃণমূলের আসল জেলা সভাপতি: শুভেন্দু

  • By UJNews24 Web Desk | Last Updated 11-02-2023, 12:12:05:pm

রাজ্যের শাসকদলের হয়ে কাজ করছেন জেলাশাসক! শুক্রবার আলিপুরদুয়ার শহরে জনসভা থেকে এমনই অভিযোগে সরব হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সরাসরি জেলাশাসকের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সুরেন্দ্র কুমার মিনা তৃণমূলের আসল জেলা সভাপতি।” এপ্রসঙ্গে সদ্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের সঙ্গেও জেলাশাসকের নিবিড় যোগাযোগ ছিল বলে দাবি জানান শুভেন্দু। শুধু তাই নয়, জেলাশাসকের বিরুদ্ধে কাঠ, পাথর, বালি পাচারের অভিযোগও তুলেছেন তিনি।

 

এদিন আলিপুরদুয়ার শহরের কাছে রেলওয়ে ওভারব্রিজ সংলগ্ন মাঠে জনসভা থেকে জেলাশাসকের সঙ্গে বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের যোগাযোগ ছিল বলেও সরব হন শুভেন্দু। সদ্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। এর পিছনে সুরেন্দ্র কুমার মিনারও হাত ছিল বলে পরোক্ষে অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, “সুমন কাঞ্জিলালের সঙ্গে কতবার গত একমাসে মিটিং করেছে, তার সিসিটিভি ফুটেজ আমার কাছে আসে। সুমনের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে গত একমাসে এসপি আর ডিএম কী কী করেছে, সব তথ্য নিয়ে আমি কথা বলছি।” একইসঙ্গে জেলাশাসকের বিরুদ্ধে বালি, পাথরের অভিযোগ তুলে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “তিনি (সুরেন্দ্র কুমার মিনা) কত পাথর, কত বালি তুলেছেন, কত চন্দন কাঠ পাচার করেছেন, তার সব হিসেব আমাদের কাছে আছে।” তবে এসব মেনে নেওয়া হবে না জানিয়ে সুষ্ঠুভাবে পঞ্চায়েত ভোট করার লক্ষ্যে দলীয় কর্মীদের জেলাশাসককে ঘেরাও করারও পরামর্শ দেন শুভেন্দু। রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, “জেলা সভাপতিকে বলব, পরীক্ষার পরে এই নিরামিষ মিটিং চলবে। ডিএম অফিস ঘেরাও করতে হবে। আমি নেতৃত্ব দেব। ২৪ ঘণ্টা সুরেন্দ্র মিনাকে আটকে রাখলে তৃণমূলের ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে গণতন্ত্র ধ্বংস করার কাজ অচিরেই বন্ধ হবে এবং পঞ্চায়েত ভোট গ্রামের মানুষের ভোট হবে। নিজের ভোট নিজেরাই দিতে পারবেন।”

আবার আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল কলকাতায় তৃণমূলের অফিসে গিয়ে বিজেপি ছেড়ে শাসকদলে যোগ দিলেও তিনি ঘাস-ফুল পতাকা হাতে নেননি। এপ্রসঙ্গে শুভেন্দুর তীব্র কটাক্ষ, “এরকম একটা ছিন্নমূলকে উত্তরীয় পরিয়েছে, পতাকা ধরানোর ক্ষমতা হয়নি। আরেকটা ললিপপ খেয়েছে। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ধরিয়ে দিয়েছে। দম থাকলে প্রকাশ্যে সভা করে বলুন, তৃণমূলে যোগ দিলাম। সেকথা বলার ক্ষমতা নেই।” সুমন কাঞ্জিলালের মতো বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মাও সম্প্রতি দলত্যাগ করেছেন। টাকা দিয়েই এঁদের কিনে নেওয়া হয়েছে এবং এতে বিজেপির কিছু যায়-আসে না বলেও দাবি জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তবে তাঁরা টাকা রাখতে পারবেন না এবং মাটি খুঁড়ে টাকা বের করবেন বলেও দাবি জানান শুভেন্দু।

যদিও শুভেন্দু অধিকারীর সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি বলেন, “জেলাশাসক, পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগের যদি কোনও তথ্য হাতে থাকে তাহলে প্রকাশ্যে আনুন। সেটা যদি আনতে পারেন তাহলে বিধায়ক পদ ছেড়ে দেব।” আর টাকা নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিধায়কের মন্তব্য, ভয় ধরানো কথাবার্তা তো চলছেই। বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে নারাজ তিনি। একইসঙ্গে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন কিনা তা নিয়ে মুখ না খুললেও এদিন সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, “আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে স্বাগত জানিয়েছেন। আমি কী করেছি, সেটা ছবি এবং আমার কথা প্রমাণ করছে। আমি মা-মাটি-মানুষের উন্নয়নে কর্মযজ্ঞে কাজে যোগ দিয়েছি। এর থেকে বেশি কিছু আর বলার নেই।”

 

Share this News

RELATED NEWS