৯০০০ মৃত্যুর সাক্ষী হয়েছিল নেপাল, ৮ বছর আগের এপ্রিলের স্মৃতি এখনও দগদগে
- By UJNews24 Web Desk | Last Updated 04-11-2023, 02:10:47:pm
শুক্রবার রাত প্রায় পৌনে ১২ টার সময় কেঁপে উঠে কলকাতার বহুতলগুলো। খবর আসে শুধু কলকাতা নয়, দিল্লি, বিহার, উত্তরাখণ্ডও মানুষ টের পেয়েছেন ভূমিকম্পের প্রভাব। কিছুক্ষণের মধ্যেই জানা যায়, নেপালের ভূমিকম্পেই এভাবে কেঁপে উঠেছে দিল্লি থেকে কলকাতা। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ২০১৫ সালের এক এপ্রিলের সকালে। খাস কলকাতায় বসেও সে দিন বেশ বোঝা গিয়েছিল যে নেপালের অবস্থা ঠিক কতটা খারাপ। প্রথম কম্পনে কিছু বুঝে ওঠার আগেই মৃত্যু হয়েছিল বহু মানুষের। ৮ বছর পর আজও নেপালবাসীর মনে সেই ক্ষত দগদগে। সেই ভয়ঙ্কর সকালের কথা মনে করলে শিউরে ওঠেন তাঁরা।
২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল। ঘড়িতে তখন সকাল ১১টা ৫৬ মিনিট। শনিবারের সকালে কেউ কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত, কেউ বাড়ির কাজ সারছেন। চোখের নিমেষে সেদিন নেমে এসেছিল দুঃস্বপ্ন। ঠিক কী হল, কোথায় পরিজনেরা, সে সব বুঝে ওঠার আগেই খেলনা বাড়ির মতো ভেঙে পড়ে মাথার ছাদ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে হারিয়ে যান বহু মানুষ। কাঠমাণ্ডু থেকে মাত্র ৮৫ কিলোমিটার দূরে বারপাক ছিল সেই কম্পনের উৎসস্থল।
কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয় নেপাল। শতবর্ষ পুরনো যে সব বিল্ডিং-কে হেরিটেজ তকমা দিয়েছিল ইউনেস্কো, সেগুলিও ভেঙে পড়ে এক লহমায়। মাটির সঙ্গে মিশে যায় কাঠমাণ্ডু দরবার স্কোয়ার, বৌদ্ধনাথ স্তূপ, স্বয়ম্ভূনাথ স্তূপ, চাঙ্গু নারায়ণ মন্দির। উদ্ধারকাজ শুরু হওয়ার আগেও মৃতের সংখ্যাটা আন্দাজ করতে পারেননি অনেকেই। এরপর শুধুই মৃত্যুর খবর সামনে আসতে থাকে। শেষ পর্যন্ত প্রায় ৯০০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল।
তবে সেই ৭.৮ মাত্রার কম্পনই শেষ ছিল না। একের পর এক আফটারশক যেন আতঙ্ক কাটতেই দিচ্ছিল না। ১৫ থেকে ২০ মিনিট অন্তর অন্তর আফটার শকের কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের জেরে ধস নেমেছিল মাউন্ট এভারেস্টেও। ২২ জনের মৃত্যু হয়েছিল সেই ঘটনায়। এমনকী সেই আফটারশকের তীব্রতা এতটাই ছিল যে ওই ঘটনার ১৫-১৬ দিন পর চিনের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প হয়। সেই আফটারশকেও ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনাতেও ঘরছাড়া হয়েছিল ২৫০০ মানুষ।
নেপাল যে বরাবরই ভূমিকম্পপ্রবণ, সে ব্যাপারে অবশ্য বারবার সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। শুক্রবার রাতের পর আবারও প্রশ্ন উঠছে, ঠিক কত বড় বিপর্যয়ের জন্য অপেক্ষা করছে নেপাল?