ভয়ডরহীন ক্রিকেটই ভারতের ভরসা, ভয়ও!

  • By UJNews24 Web Desk | Last Updated 15-11-2023, 11:31:36:am

টানা ম্যাচ। টানা জয়ও। লিগ পর্বে নয়ে নয়। ক্লাইভ লয়েড, রিকি পন্টিংদের মতো হতে পারবেন রোহিত শর্মা? সুযোগ রয়েছে এই দুই কিংবদন্তির মতোই নেতা হিসেবে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। আর মাত্র দুটো ম্যাচ। জিতলেই চ্যাম্পিয়ন। হারলে আবারও অপেক্ষা। স্বপ্নভঙ্গ। এক যুগ পর ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ। এই সুযোগ ভারতীয় দলের কোনও সদস্যই হারাতে চাইবেন না। তার জন্য আজকের প্রথম হার্ডল পেরোতে হবে। 

২০১১ সালে ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। অপেক্ষা মিটেছিল ২৮ বছরের। আয়োজক দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের ট্রেন্ড গড়েছিল ভারত। ২০১৫ সালে যৌথ ভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। ঘরের মাঠে পঞ্চম বিশ্বকাপ জয় অজিদের। তেমনই গত বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইংল্যান্ড। ভারতের শুরু করা ট্রেন্ড এ বারও যদি বজায় থাকে? প্রত্যাশা সেটাই।

এক যুগ আগে এই ওয়াংখেড়েতেই ট্রফি তুলেছিল ভারত। আজ সেখানেই ফাইনাল নিশ্চিতের লক্ষ্যে নামছে টিম ইন্ডিয়া। প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। গত কয়েক বছর আইসিসি টুর্নামেন্টের পরিসংখ্যানে দেখা যাবে, নিউজিল্যান্ড নামে ‘আন্ডারডগ’ হিসেবে। হয়ে ওঠে ‘ডার্কহর্স!’ এ বারও তাই। টুর্নামেন্টের শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল কিউয়িদের। দলে একাধিক চোট সমস্যা, টানা হারে জটিল অঙ্কের সামনে ছিল নিউজিল্যান্ড। চতুর্থ দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে। নকআউট পর্বে নিউজিল্যান্ড কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে, ভারতের চেয়ে ভালো কে জানবে!

চার বছর আগে ম্যাঞ্চেস্টারে এই নিউজিল্যান্ডের কাছেই হেরে সেমিফাইনালে বিদায় নিয়েছিল ভারত। লিগ পর্বে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও শেষ চারে ‘মেন ইন ব্ল্যাক’-এ আটকে গিয়েছিল ‘মেন ইন ব্লু’। ম্যাঞ্চেস্টার থেকে মুম্বই। মাঝে টিম ইন্ডিয়ায় বদলে গিয়েছে অনেক কিছু। কোচ, অধিনায়ক বদল হয়েছে। টিমের মানসিকতাতেও। বদলায়নি, প্রত্যাশার চাপ। বরং এ বার ঘরের মাঠে তা আরও বেশি।

বিশ্বকাপে এখনও অবধি ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের ভরসা দিয়েছে টিমের ভয়ডরহীন ক্রিকেট। সেমিফাইনালে সেটাই ভরসা, ভয়ও। এখানে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। ক্রিকেটের ফরম্যাট যাই হোক, একটা মুহূর্তই বদলে দিতে পারে ভবিষ্যৎ। ওডিআই ক্রিকেটে তার মধ্যে অন্যতম প্রথম পাওয়ার প্লে। ব্যাটিং হোক বা বোলিং, শুরুর দশ ওভার কে কতটা কাজে লাগাতে পারছে, তার ওপর ম্যাচের গতিপথ অনেকটাই নির্ভর করে। ভারতীয় ব্যাটিং শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে খেলছে। সেখানে ঝুঁকিও থাকে। সেটাই ভয়।

বোলিংয়ে দু-দলের দুটি দিক। ভারত পাঁচ স্পেশালিস্ট বোলারে কম্বিনেশন খেলিয়েছে লিগে নিউজিল্যান্ড ম্যাচ থেকেই। এখনও অবধি এই কম্বিনেশন সফল। লিগের শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে নয় বোলার ব্যবহার করলেও সেটা যে শুধুই ট্রায়াল, বলার অপেক্ষা রাখে না। ষষ্ঠ বোলার ব্যবহারের প্রয়োজন হলে, ভারত নিঃসন্দেহে চাপে পড়বে। নিউজিল্যান্ডের পরিস্থিতিও কার্যত একই। তাদের একাদশে যদি না বিশাল কোনও পরিবর্তন হয়, বোলার অনেক। কিন্তু স্পেশালিস্ট বোলার চারজন। বাকি ওভার করছেন রাচিন রবীন্দ্র, গ্লেন ফিলিপসের মতো পার্টটাইম বোলার। তাদের বিরুদ্ধে ভারতের ব্যাটিং সুযোগ কতটা কাজে লাগাতে পারে, সে দিকেও নজর থাকবে।

গ্রুপ লিগে এখনও অবধি সেই অর্থে ভারতকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়নি। সাময়িক চাপ সামলে উঠতে কোনও সমস্যাই হয়নি। কিন্তু নকআউটের যে বাড়তি চাপ থাকে। যতই আরও একটা ম্যাচ ভাবার চেষ্টা হোক, নকআউট কথাটা মাথায় এলে চাপের আগমনও নিশ্চিত। ভারত অধিনায়ক রোহিত সেটা স্বীকারও করে নিয়েছেন। টিম ইন্ডিয়ার সেই চাপ সামলে নেওয়ার দক্ষতা রয়েছে। কিন্তু বহু ব্যবহারে সেই ক্লিশে বাক্যটাই যেন বলতে হয়, ক্রিকেটে যে দিন, যেই দল ভালো খেলবে, জয় তারই।

 

Share this News

RELATED NEWS